বেলের শরবত এবং গর্ভাবস্থায় বেল খাওয়ার উপকারিতা

Indian bael,Bengal quince, Wood Apple, Aegle marmelos, বেল ফল

বেলের শরবত এবং গর্ভাবস্থায় বেল খাওয়ার উপকারিতা

বেল ফল 

বেল বাংলাদেশের একটি সুপরিচিত ফল। বেল একটি পুষ্টিকর আর উপকারী ফল। বেলের শরবত অনেক বেশি জনপ্রিয়। কাচা পাকা দুটোই সমান উপকারী। কাচা বেল ডায়রিয়া ও আমাশয় রোগে ধন্বন্তরী। পাকা বেলের শরবত সুস্বাদু। বেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও পটাসিয়ামের মত মূল্যবান পুষ্টি উপাদান। বেলকে বলা হয় শ্রীফল কারণ হিন্দুদের পুজা-অর্চনায় বেলের পাতা ও ফল ব্যবহার করা হয়। হিন্দুরা বেল কাঠ ও পবিত্র জ্ঞান করে বিধায় কখনো বেল কাঠ পুড়িয়ে রান্না করে না।

বেলের অজানা তথ্য 

এর বাংলা নাম Bengal quince ,ইংরেজি নাম Wood Apple ,বৈজ্ঞানিক নাম: Aegle marmelos, অর্থাৎ লেবু পরিবারের সদস্য। এর সংস্কৃত নাম বিল্ব। বেলের জন্ম ভারতবর্ষে তথা বাংলাদেশে  বেল গাছ বড় ধরনের বৃক্ষ যার উচ্চতা প্রায় ১২-১৮ মিটার। শীতকালে সব পাতা ঝরে যায়, আবার বসন্তে নতুন পাতা আসে। পাতা ত্রিপত্র যুক্ত, সবুজ, ডিম্বাকার, পত্রফলকের অগ্রভাগ সূঁচাল। ফুল হালকা সবুজ থেকে সাদা রঙের। বোঁটা ছোট, ৪-৫টি পাঁপড়ি থাকে, পুংকেশর অসংখ্য, গর্ভাশয় বিস্তৃত ও কেন্দ্রস্থল খোলা। ফুলে মিষ্টি গন্ধ আছে। ফল বড়, গোলাকার, শক্ত খোসাবিশিষ্ট। ফলের ভিতরে শাঁস ৮-১৫টি কোয়া বা খন্ডে বিভক্ত থাকে। প্রতিটি ভাগে বা খন্ডে চটচটে আঠার সাথে অনেক বীজ লেগে থাকে। কাচা ফলের রঙ সবুজ, পাকলে হলদে হয়ে যায়। ভিতরের শাঁসের রঙ হয়ে যায় কমলা বা হলুদ। পাকা বেল থেকে সুগন্ধ বের হয়। পাকা বেল গাছ থেকে ঝরে পড়ে। গাছ যখন ছোট থাকে তখন তাতে অনেক শক্ত ও তীক্ষ্ণ কাঁটা থাকে। গাছ বড় হলে কাঁটা কমে যায়। খাদ্য হিসাবে বেল অসাধারণ উপকারী । তবে বেল গাছ প্রচুর পরিমাণে কমে যাওয়ায় এখন চাহিদার তুলনায় তা অপ্রতুল। বাজারে পাকা বেল খুব চড়া দামে বিক্রি হয়। কিন্তু ধীরে ধীরে বেলের বিস্তার কমে যাওয়ায় বেল খুব কম পাওয়া যায়। 

বেলের গুনাগুন 

১০০ গ্রাম বেলের শাঁসে থাকে: জল 54.96-61.5 গ্রাম, আমিষ 1.8-2.62 গ্রাম ; স্নেহপদার্থ 0.2-0.39 গ্রাম ; শর্করা 28.11-31.8 গ্রাম ; ক্যারোটিন 55 মিলিগ্রাম ; থায়ামিন 0.13 মিলিগ্রাম ; রিবোফ্ল্যাবিন ১.১৯ মিলিগ্রাম ;নিয়াসিন ১.১ মিলিগ্রাম ; এসকর্বিক এসিড ৮ - ৬০ মিলিগ্রাম ; এবং টারটারিক এসিড ২.১১ মিলিগ্রাম।

বেলের ওষধি গুন্ 

বেল কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ও আমাশয়ে উপকার করে। আধাপাকা সিদ্ধ ফল আমাশয়ে অধিক কার্যকরী। বেলের শরবত হজমশক্তি বাড়ায় এবং তা বলবর্ধক। বেলের পাতার রস মধুর সাথে মিশিয়ে পান করলে চোখের ছানি ও জ্বালা উপশম হয়। পাতার রস, মধু ও গোল মরিচ এর গুঁড়া মিশিয়ে পান করলে জন্ডিস রোগ নিরাময় হয়। পেট খারাপ, আমাশয়, শিশুর স্মরণ শক্তি বাড়ানোর জন্য বেল উপকারী। বেলে প্রচুর ভিটামিন সি আছে। এই ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। বেল নিয়মিত খেলে কোলন ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশে কমে যায়। পাকস্থালীতে উপকারি পরিবেশ তৈরী করে। পাইলস ,এনাল ফিস্টুলা ,হেমোরয়েড প্রতিরোধ কার্যকরী। 

বেলের শরবত এবং গর্ভাবস্থায় বেল খাওয়ার উপকারিতা বেলের শরবত এবং গর্ভাবস্থায় বেল খাওয়ার উপকারিতা Reviewed by abdul motaleb on October 17, 2020 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.