মানুষ বিহীন আজব গ্রাম Strange village without people (The story of the shepherd king)


 মানুষ বিহীন আজব গ্রাম 

এক ছিল সৎ রাখাল। প্রতি দিনের মতো গরু নিয়ে মাঠে পার্ন্ততরে ঘুরে বেড়ানো তার কাজ। সে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজি আল্লার বান্দা ছিল। গাছের ছায়া তলে জোহরের নামাজ টা আদায় করে গাছের সাথে হেলান দিয়ে বসলো। কিছুক্ষনের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়লো। ঘুম থেকে উঠে সে তার গরু গুলোর কাছে গেল। রাখাল দেখতে পায় কয়েক টা গরু আহত অবস্থায় এবং দুটো গরু নাই। রাখাল গরু দুটো খুঁজতে লাগলো ,খুজতে খুজতে রাখল আজব গ্রামে গিয়ে পোঁছলো। কিন্তু সেখানে কোনো মানুষ কে সে দেখতে পায় না. কাউকে যে জিজ্ঞেস করবে গরু দুটো দেখছে কিনা রাখাল পুরা গ্রাম ঘুরে ক্লান্ত। গ্রামে ঘর বাড়ি সবই আছে কিন্তু কোনো মানুষ নাই। গরুর কথা ভুলে গিয়ে রাখাল চিন্তা করলো মানুষ শূন্য এই গ্রাম বিষয় টা  কি?

রাখাল ভাবতে ভাবতে সামনে হাঁটা শুরু করলো। একটু দূরে সে দেখতে পায় একটা হিন্ধু সম্প্ৰয়ের মন্দির। ভাবলো ও খানে গেলে কাউকে দেখতে পাবে কিন্তু না সে খানে কেউ নেই। সেখান থেকে কিছু দূর একটা মসজিদ দেখে শেষ ভরসা মসজিদে পেয়ে যাবো কাউকে কিন্তু না কেউ নেই। ভীষণ চিন্তায় পড়ে গেলো। এদিকে আসরের নামাজের সময় হলো ভাবলো মুয়াজ্জিন সাহেব আসবেন কিছুক্ষন অপেক্ষা করলেন, কিন্তু তিনিও আসলেন না।
 
এবার নিজেই আজান দেওয়া শুরু করলেন। আজান শুনে কেউ তো আসবেন। কেউ আসলো না একা একা নামাজ আদায় করছেন। সালাম পেরনোর সময় একটা সাপ এসে রাখালের হাত পেঁচিয়ে টানা শুরু করলো। রাখাল ভয়ে কাঁপতে লাগলো আর সাপ রাখাল কে পাহাড়ের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। রাখাল সাপ কে  প্রশ্ন করলো আমাকে কোথায় নিয়েই যাচ্ছ। বেজবান প্রাণী কোনো উত্তর দিলোনা।
 
পাহাড়ের পাশে নিয়ে ছেড়ে দিলো। রাখাল এদিক সেদিক তাকিয়ে দেখলো কিছুই দেখেনা। সে সাপ কে জিজ্ঞেস করলো আমাকে এখানে কেনো নিয়েই আসলে কি হয়েছে। সাপটি পাহাড়ের চিপায় সরু পথে যেতে লাগলো রাখাল ও পিচে পিছে যেতে লাগলো রহস্য কি জানতে হবে। রাখাল দেখলো সামনে একটা বড় পাথর পড়ে আছে। পাথরে চাপা পরে আছে আর একটা সাপ। রাখাল বুজতে পারলো একে বাঁচানোর জন্য আমাকে নিয়ে আসলো।

পাথর টা সরানোর পর সাপ দুটি মানুষের রূপ ধারণ করলো। এই দেখে রাখাল অজ্ঞান হয়ে গেল। একটু পরেই রাখালের হুশ ফিরে আসে। তখন তারা বললো আমরা নাগ নাগিনী। আমার নাগ কে বাঁচানো জন্য তোমাকে ধন্যবাদ। তখন রাখাল তাদের কে গ্রামের মানুষের কথা বললো। জবাবে তারা বলল একটা রাক্ষুস আমাদের কে তাড়া করেছে যার কারণে নাগ রাজ্ পাথরে চাপা পড়েছে। আমরা মানুষ হয়ে এ গ্রামে বহু দিন থেকে বসবাস করছি। হঠাৎ একদিন লোকজন বলাবলি করছিলো মোয়াজ্জেম সাহেব কে খুঁজে পাচ্ছেনা। 

একজন একজন করে গ্রামের সবাই গায়েব হয়ে যাচ্ছে। তখন আমরা সাপে রূপান্তরিত হয়ে কারণ টা খুজছিলাম। আমরা যখন পাহাড়ের কাছে আসলাম ওই রাক্ষস টা আমাদের দাপিয়ে তাড়া করলো। রাখাল বুজতে পারলো গায়েব হওয়ার কারণ কি। গ্রামের সব মানুষ কে রাক্ষুস নিয়ে যাচ্ছে। 

কিন্তু কোথায় নিয়ে যাচ্ছে কারো জানা নাই। নাগ রাজ্ বলছে আমি মনে হয় আর বাঁচবোনা ,আমি মরার আগে একটা ভালো কাজ করে যেতে চাই। তোমরা আমাকে পাহাড়ের উপরে রেখে এসো ,রাক্ষসটা আমাকে পেলে অবশ্যই নিয়ে যাবে। তখন তোমরা পিছু করে জানতে পারবে কোথায় যাচ্ছে। 

কথা অনুযায়ী নাগ রাজকে পাহাড়ের উপরে রেখে নাগ রানী আর রাখাল গোপনে বসে আছে। ক্ষানিক পরে রাক্ষুস এসে নাগ রাজকে বন্দি করলো তার যাদুর খাঁচায়। যেতে যেতে নাগ রাজ্ চালাকি করে পথে পথে নিশানা ছেড়ে যায়। রাখাল আর নাগ রানী সেই পথ ধরে চলতে লাগে। পাহাড়ের শেষ সীমানায় নির্জনে তাঁদের কে  যাদুর খাঁচায় বন্দি রাখা হয়। 

রাখাল ভাবতেছে তাদেরকে কিভাবে মুক্ত করা যায়। কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছে না এ দিকে শয়তান রাক্ষস নাগ রাজকে খেয়ে ফেলার খুশিতে নাচানাচি করছে। রাখাল দেখলো গ্রামের সব মানুষ এবং তার গরু দুটো রাক্ষসের হাতে বন্দি। কিভাবে ছাড়ানো যায় চিন্তায় বিভোর রাখাল। এমন সময় মাগরিবের নামাজ খুবই নিকটে। রাখালের মনে পড়লো জীন ভুত শয়তান পেত্নী এরা তো কোরআন তেলাওয়াত শুনতে পারে না হয় পালিয়ে যাবে না হয় আগুন ধরে যাবে আর রাক্ষুস তো তাদেরই বংশধর। 

রাখাল উচ্চ স্বরে আজান দেওয়া শুরু করলো তখননি আসল ঘটনা ঘটে , রাক্ষুসের গাঁয়ে আগুন ধরে যায়, নাগ রাজ্ তার হাতে থাকাতে দুই জনই ফুঁড়ে মারা যায়। রাখাল যখন নামাজের মধ্যে উচ্চ স্বরে কোরআন তিলাওয়াত করছিলো যাদুর খাঁচা গুলো খুলে গেলো। গ্রাম বাসি মুক্ত হলো সাথে গরু দুটো। গ্রাম বাসি খুশিতে নাঁচানাঁচি করছে , নাগ রাজার শোকে রানী কাঁদছিলো।
 
নাগ রানীকে রাখাল প্রশ্ন করলো তুমি এখন কোথায় যাবে কি করবে। রানী বললো নাগ রাজ্ ছাড়া আমার জীবনের কোন মূল্য নাই আমি কি করবো। এমন সময় মোয়াজ্জেমের চোখে পড়লো দুজন যুবক যুবতী কে (রানী আর রাখাল) . তিনি প্রশ্ন করলেন তোমরাকি স্বামী স্ত্রী, তাঁরা হাঁ এবং না কিছুই বল্লোনা , রাখাল রানীর দিকে তাকিয়ে বলে তুমি যদি চাও।

রানী রাখালকে বললো ,তুমি কি আমাকে রাখাল রানী হতে দিবা , তাহলে মোয়াজ্জেম সাহেব কে বলো আমাদের শুভ কাজটা শেষ করতে। মোয়াজ্জেম গ্রাম বাসি কে সাথে নিয়ে শুভ কাজ টা শেষ করলো। 
গ্রাম বাসি ফিরে এলো । রানী আর রাখালকে রাখাল-রানী করে বিদায় দিলো  আপন ঠিকানায়।

(সম্পূর্ণ কাল্পনিক) 
লেখক মাসুদ 
মানুষ বিহীন আজব গ্রাম Strange village without people (The story of the shepherd king) মানুষ বিহীন আজব গ্রাম Strange village without people (The story of the shepherd king) Reviewed by abdul motaleb on May 26, 2021 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.