হরিতকির উপকারিতা
হরিতকি আমাদের অতি পরিচিত একটি ফল। এটি খুবই তিতা একটি ফল কিন্তু এর পুষ্টিগুণ অনেক। হরিতকিতে রয়েছে ট্যানিন, অ্যামাইনো এসিড, ফ্রুকটোজ ও বিটা সাইটোস্টেবল । হরতকি আমাদের দেহের রক্ত পরিষ্কার করে এবং একই সঙ্গে দেহের শক্তি বৃদ্ধি করে। এটা রক্তচাপ ও অন্ত্রের খিঁচুনি কমায়। এছাড়া আমাদের হৃদপিণ্ড ও অন্ত্রের অনিয়ম দূর করে। এটি পরজীবীনাশক, পরিবর্তনসাধক, অন্ত্রের খিঁচুনি রোধক এবং স্নায়ুবিক শক্তিবর্ধক। হরিতকি কোষ্ঠকাঠিন্য, স্নায়ুবিক দুর্বলতা, অবসাদ এবং অধিক ওজনের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
হরিতকি গাছ পরিচিতি
হরিতকি গাছ বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্রই দেখতে পাওয়া যায়।হরিতকির বৈজ্ঞানিক নাম টারমেনালিয়া চেবুলা। মধ্যম থেকে বৃহৎ আকারের পাতাঝরা বৃক্ষ। পাতা গাঢ় সবুজ এবং লম্বাটে। বাকল গাঢ় বাদামী। বাকলে লম্বা ফাটল থাকে। কাঠের রঙ ঘন বেগুনি। কাঠ খুব শক্ত। মধ্যম আকারের টেকসই। গাছের উচ্চতা ১০০ থেকে ১২০ ফুট পর্যন্ত। ফল সংগ্রহের সময় জানুয়ারি–মার্চ (পৌষ–চৈত্র)। প্রতি কেজিতে ১৫০–২৫০টি বীজ হয়। ফল পাকার পর গাছ থেকে ঝরে পড়ে। গাছের তলা থেকে ফল ও বীজ সংগ্রহ করতে হয়। বীজ।
বপণে অঙ্কুরোদমের হার অতি কম। শতকরা ৫০/৬০ ভাগ। বীজ থেকে চারা গজাতে ১৫–২০ দিন সময় লাগে। জুন–জুলাই এ বীজ বপণের সময়। বীজ সরাসরি জমিতে বপণ বা একবছর বয়েসি চারা তৈরি করে বর্ষাকালে (জুলাই–আগস্টে) চারা লাগাতে হয়। চৈত্র থেকে বৈশাখ মাসের মধ্যে ফুল ফুটতে শুরু করে। তারপর ফল ধরে। শরৎকালে পাতা খসে পড়ে। শীতকালে পত্রহীন হয়ে যায়।
হরিতকি ব্যবহার বিধি
- হরিতকিতে অ্যানথ্রাইকুইনোন থাকার কারণে রেচক বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে হরিতকি। অ্যালার্জি দূর করতে হরিতকি বিশেষ উপকারী।
- হরিতকি ফুটিয়ে সেই পানি খেলে অ্যালার্জি কমে যাবে।
- হরিতকি গুঁড়া নারিকেল তেলের সঙ্গে ফুটিয়ে মাথায় লাগালে চুল ভালো থাকবে।
- হরিতকির গুঁড়া পানিতে মিশিয়ে খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে।
- গলা ব্যথা বা মুখ ফুলে গেলে হরিতকি পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি দিয়ে গার্গল করলে আরাম পাবেন।
- দাঁতে ব্যথা হলে হরিতকি গুঁড়া লাগান, ব্যথা দূর হবে।
- রাতে শোয়ার আগে অল্প বিট লবণের সঙ্গে ২ গ্রাম লবঙ্গ বা দারুচিনির সঙ্গে হরিতকির গুঁড়া মিশিয়ে খান। পেট পরিষ্কার হবে।
- রক্ত চাপ ও অন্ত্রের খিঁচুনি কমায়।
- দেহের শক্তি বর্দ্দি করে।
No comments: