বহেড়া গাছের পরিচিতি এবং ওষধি গুনাগুন

Bahira, beleric, knave myrobalan, Terminalia Billerica, বহেড়া
বহেড়া গাছের পরিচিতি 

বাংলা নাম : বহেড়া

ইংরেজি নাম :bahira or beleric or knave myrobalan.

বৈজ্ঞানিক নাম: Terminalia Billerica

এই গাছ টি সাধারণত বনজ জাতীয় গাছ। গাছের মূল নাম বহেড়া বা অক্ষ হলেও এর স্থানীয় নাম বয়ড়া। এই গাছ রোপনের দরকার হয় না। পতিত জমির ধারে, জমির আইলে এটি আপনা-আপনি জন্মে।  বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলেই বহেড়া গাছ জন্মে এ গাছ বেশি দেখা যায়। পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম, বাঁকুড়া ও বর্ধমানের শালবনেও এই গাছ প্রচুর জন্মে।

এই গাছের ব্যবহার্য অংশ হলো ফল ও বাকল। বহেড়া গাছ বেশ বড় হয়। এই গাছ উচ্চতায় ৫০ থেকে ৯৫ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। গাছের গুড়িও বেশ লম্বা। এর বাকল ধূসর-ছাই রঙের। পাতা কাঁঠাল পাতার মতো মোটা এবং লম্বায় প্রায় ৫ ইঞ্চি। এর ফুল ডিম্বাকৃতির প্রায় ১ ইঞ্চির মতো লম্বা এবং ফল গোল ও ডিম্বাকৃতি—এই দু'রকমের হয়। কাঁচা পাকা বহেড়া ফলের রঙ সবুজ থাকে। পেকে গেলে শুরুতে লাল হয় এবং পরে শুকিয়ে ক্রমশ বাদামী হয়। ফলের বাইরের আবরণ মসৃণ ও শক্ত এবং ভেতরে একটি মাত্র শক্ত বীজ থাকে। গ্রীষ্মকালে এই গাছে ফুল আসে। তারপর ফল হয়। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে এর ফল পেকে যায় এবং ফল পুষ্ট হলে বোঁটা থেকে খসে পড়ে। এর ফল ও ফলের শাঁস ওষুধ হিসেবে ব্যবহূত হয়। 

বহেড়ার ওষধি গুনাগুন 

শরীরের কোনো স্থানে ফুলে গেলে বহেড়ার বিচি বাদ দিয়ে শুধু ছাল বেটে একটু গরম করে নিয়ে ফুলো জায়গায় প্রলেপ দিলে ফুলো কমে যায়। 

বহেড়ার বিচি বাদ দিয়ে শাঁসের গুড়া ডালিম পাতার রসের সঙ্গে মিশিয়ে টানা কয়েকদিন খেলে কৃমি দূর হয়। 

বহেড়ার বিচির মধ্যে থাকা শাঁসের তেল বের করে নিয়মিত শ্বেতীর ওপর লাগালে গায়ের রং কিছুদিনের মধ্যেই স্বাভাবিক হয়ে যায়। 

গরম ঘিয়ে বহেড়ার গুঁড়ো মিশিয়ে গরম করে খেলে সর্দি-কাশি নিরাময় হয়। বিশেষ করে আধা চা চামচ বহেড়া-চূর্ণ ও ঘি একসঙ্গে গরম করে তার সঙ্গে মধু মিশিয়ে চেটে খেলে কাশি উপশম হয়।

এক্ষেত্রে প্রথমে বহেড়া ফলের বিচি বাদ দিয়ে শুধু খোসা নিয়ে পানি দিয়ে ভালোভাবে মসৃণ করে বেটে নিতে হবে। তারপর এক কাপ পানিতে গুলে পানি ছেঁকে নিয়ে সেই পানিটুকু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে নিয়মিত কিছুদিন করলে চুল ওঠা বন্ধ হবে। 

ইন্দ্রিয়ের দুর্বলতা থেকে মুক্তি পেতে হলে প্রতিদিন দুটি করে বহেড়ার বিচির শাঁস খেতে হবে। যথাযথ ফল পেতে টানা কয়েক সপ্তাহ খেতে হবে। 

শ্লেষ্মা রোগ থেকে মুক্তি পেতে চাইলে নিয়মিত আধা চা-চামচ বহেড়ার গুঁড়া ঘিয়ে গরম করে মিশ্রণ তৈরি করে নিতে হবে। তৈরি করা মিশ্রণটির সঙ্গে গরম করা মধু মিশিয়ে চেটে খেতে হবে। 

আমাশয়ে প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস পানির সঙ্গে এক চামচ বহেড়ার গুঁড়া মিশিয়ে টানা দুই সপ্তাহ খেতে হবে। 

বহেড়ার বিচির শাঁস সামান্য পানিতে খুব মিহি করে পিষে বা বেটে চন্দনের মতো টানা কয়েক মাস টাকে লাগালে টাক সেরে যায়।


বহেড়া গাছের পরিচিতি এবং ওষধি গুনাগুন বহেড়া গাছের পরিচিতি এবং  ওষধি গুনাগুন Reviewed by abdul motaleb on October 18, 2020 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.